রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন
স্পোর্টস রিপোর্টার, ই-কণ্ঠ টোয়েন্টিফোর ডটকম ॥ ভুবনেশ্বরের কালিঙ্গ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ২ আগস্ট ম্যাচটি শুরু হয়েছে বাংলাদেশ সময় বিকেলে নেপালের মুখোমুখি বাংলাদেশ। মঙ্গলবার নিজেদের শেষ লীগ ম্যাচে নেপালের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে বাংলাদেশ।
প্রথম তিন ম্যাচ জেতার পরই বাংলাদেশের ফাইনাল খেলা প্রায় নিশ্চিত হয়েছিল। ফাইনালের মঞ্চে উঠতে যথেষ্ট ছিল ড্র। বাংলাদেশের লক্ষ্য যদিও ছিল জয়রথে থাকার। পিয়াস আহমেদের গোলে সেই সম্ভাবনাও জেগেছিল। নেপাল পরে ঘুরে দাঁড়াল লড়াই করে। তবে শেষ পর্যন্ত সমীকরণ মিলিয়ে ঠিকই সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠে গেল বাংলাদেশ। আগের তিন ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১-০, ভারতকে ২-১ ও মালদ্বীপকে ৪-১ গোলে হারায় বাংলাদেশ।
তাতেই পাঁচ দলের মধ্যে সবার সেরা হয়ে ফাইনাল খেলা নিশ্চিত হয়েছে পল থমাস স্মলির দলের। আসরে প্রথমবারের মতো শিরোপা পাওয়ার লড়াইয়ে আগামী শুক্রবার ফাইনালে মাঠে নামবে বাংলার তরুণেরা। সেখানে পিয়াস-ইমরানদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক ভারতের যুবারা। লীগ ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে ২-১ গোলে হার মানা ভারত দ্বিতীয় সেরা দল হয়ে ফাইনালের টিকেট কেটেছে।
এই ম্যাচের পর নেপাল ও ভারতের পয়েন্ট ৬। লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে মঙ্গলবারই মুখোমুখি হবে ভারত ও মালদ্বীপ। এ ম্যাচের ফল নির্ধারণ করে দেবে ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ। আর মাত্র এক জয় পেলেই সাফ অনুর্ধ-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়ের গৌরবে ভাসবে লাল-সবুজের দেশ। ভারতের ওড়িশার ভূবনেশ্বরে চলমান আসরের ফাইনালে জায়গা করে নেয়ার পর এমন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়েছে। পাঁচ দল নিয়ে সিঙ্গেল লীগের খেলায় অপ্রতিরোধ্য দাপট দেখিয়ে অপরাজিত থেকে ফাইনালের রঙিন মঞ্চে উঠেছে বাংলার দামাল ছেলেরা। নেপালের জন্য ফাইনাল খেলতে হলে এই ম্যাচ জয়ের বিকল্প কিছু ছিল না। আগের ম্যাচে ভারতের কাছে আট গোল হজম করা দলটি বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নেমে তাই শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে। রক্ষণ অটুট রেখে পাল্টা আক্রমণের ছকে ছিল বাংলাদেশ।
নবম মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো পাসে রফিকুল ইসলাম নাগাল পাওয়ার আগেই ছুটে এসে গ্লাভসে নেন নেপাল গোলরক্ষক।
ত্রয়োদশ মিনিটে সুমিত শ্রেষ্ঠার ভুল হেড পাসে সুযোগ পেয়েছিলেন রফিকুল, কিন্তু গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে সুযোগ নষ্ট করেন মালদ্বীপের বিপক্ষে গোল করা এই ফরোয়ার্ড।
৩৩তম মিনিটে বক্সের একটু উপর থেকে দিপেশ গুরংয়ের বাঁকানো ফ্রি কিক ঝাঁপিয়ে পড়ে আটকে আবারও বাংলাদেশের ত্রাতা আসিফ। বিরতির আগে বাংলাদেশ জালে বল জড়ালেও অফসাইডের কারণে গোল হয়নি।
নেপালের সঙ্গে ড্র করে ফাইনালে বাংলাদেশ
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দশ জনের দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। তানভীর আহমেদের ট্যাকলে পড়ে যান কৃতিশ রেইনা। এ নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি শুরু হয়। দুই পক্ষের মধ্যে বেঁধে যায় ধাক্কাধাক্কি। রেফারি শাহিদুল ইসলামকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেন, তানভিরকেও হলুদ কার্ড দেখান তিনি। নেপালের দিপেশকেও দেখান লালকার্ড। বেঞ্চে থাকা ২০ নম্বরও লালকার্ড পান।
লীগ পর্বে সর্বমোট চার ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে তিন জয় ও এক ড্রয়ে সর্বোচ্চ ১০ পয়েন্ট নিয়ে সেরা দল হিসেবে ফাইনালে উঠেছে লাল-সবুজের যুবারা। । জিতলে বা ড্র করলে তো ফাইনাল খেলবেই এমনকি চার গোলের ব্যবধানে হেরে গেলেও ফাইনালের টিকেট কাটত বাংলার ছেলেরা। পক্ষান্তরে নেপালের জন্য ফাইনাল খেলতে হলে এই ম্যাচ জয়ের বিকল্প ছিল না। আগের ম্যাচে ভারতের কাছে আট গোল হজম করা দলটি বাঁচামরার লড়াইয়ে নেমে তাই শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে। আর রক্ষণ অটুট রেখে পাল্টা আক্রমণের ছকে খেলে বাংলাদেশ।
৬৩তম মিনিটে কাক্সিক্ষত গোল আদায় করে বাংলাদেশ। ভারতের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে জয়ের নায়ক পিয়াস আহমেদ নোভা আবারও হিরো বনে যান। দারুণ প্লেসিং শটে তিনি নেপালের জাল কাঁপিয়ে দেন (১-০)। চার মিনিট পরই অবশ্য সমতা ফেরায় নেপাল। ডি বক্সের বাইরে থেকে আচমকা দূরপাল্লার শটে চোখ ধাঁধানো গোল করেন নিরঞ্জন মাল্লা (১-১)।
এই গোলে যদিও ছিল প্রতিপক্ষের ভুলের অবদান। নেপালের এক ডিফেন্ডার ভুল পাসে বল তুলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের একজনের পায়ে। সেই আক্রমণ থেকেই বল জালে পাঠান ভারত ম্যাচে জোড়া গোল করা পিয়াস। নেপালের সঙ্গে ড্র করে ফাইনালে বাংলাদেশ।
৬৭তম মিনিটে বদলি নিরঞ্জন মাল্লা বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে সমতা ফেরান। তিন ডিফেন্ডার তার সামনে থাকলেও কেউই প্রতিরোধের চেষ্টা করেননি! শেষ দিকে পিয়াসের ক্রস ক্রসবারের উপর দিয়ে উড়ে যায়। ৮৭তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণের সুবর্ণ সুযোগও নষ্ট করেন এই ফরোয়ার্ড। বাকি সময়ে দু’দলই বেশ কয়েকটি সুযোগ পায়। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি কেউই। এর ফলে লীগের সেরা দল হয়ে ফাইনালে উঠে যায় বাংলাদেশ। আর বিদায়ঘণ্টা বাজে হিমালয়ের দেশ নেপালের।